সৌন্দয্য নয়, নারীর চোখে পুরুষের গুণটাই আসল I Medistorebd.com
হিরের আংটি আবার বাঁকা? বাড়িতে পুত্রসন্তানের জন্ম হলে এমনটা বলেই থাকেন পরিবারের লোকেরা। গায়ের রংটা কালো, মাথায় চুল কম, চেহারার এ সব ঘাটতি দিয়ে কী এসে যায়? হাজার হোক ছেলে তো! ঠিক উল্টোটাই হয়ে থাকে মেয়েদের ক্ষেত্রে। একে মেয়ে, তায় গায়ের রং একটু ‘চাপা’, নাকটা একটু বোঁচা হলে চিন্তায় যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে আত্মীয়স্বজনদের। কী ভাবে বিয়ে হবে এই মেয়ের?
সন্তানদের বড় করে তোলার মধ্যেও ছাপ পড়ে এই মানসিকতার। ছেলেদের শেখানোই হয় তোমার গুণই আসল। মেধা আর পকেটের জোরেই জিতে নিতে পারবে মন। তবে মেয়েদের বেলায় কিন্তু পহলে দর্শনধারী, ফির গুণবিচারী। একুশ শতকে পৌঁছেও যে এই ভাবনার পরিবর্তন হয়নি এ বার তার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দিলেন গবেষকরা।
একটি সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, তথাকথিত রূপবান না হলেও স্মার্ট, চিন্তাশীল ও রসিক পুরুষরা মহিলাদের মন জিতে নিতে পারেন সহজেই। দেখতে ভাল নয়, অথচ কল্পনাপ্রবণ পুরুষদের প্রতি মহিলারা আকৃষ্ট হন। কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একেবারেই তেমন নয়। বরং, সুন্দরী নন এমন মহিলাদের যদি বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তার গভীরতা প্রকাশ পায়, তা হলেও তাদের প্রতি পুরুষরা বিশেষ আকৃষ্ট হন না। এই সমীক্ষার মুখ্য গবেষক স্কটল্যান্ডের অ্যাবারটে ইউনিভার্সিটির মনোবিদ ক্রিস্টোফার ওয়াটকিনস বলেন, অ-সুন্দরী অথচ বুদ্ধিমতি মহিলারা বরং পুরুষদের চোখে একেবারেই আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারেন না।
সমীক্ষার জন্য ওয়াটকিনস এক দল অংশগ্রহণকারীকে কিছু মহিলা ও পুরুষের ছবি দেখান। প্রথম দফায় তাদের শুধু রূপের ভিত্তিতে নম্বর দিতে বলা হয়। এর পর দ্বিতীয় এক দল অংশগ্রহণকারীকে ওই একই পুরুষ ও মহিলার ছবি দেখানো হয়। এ বার তাদের ছবির সঙ্গে তাদের গুণ, বুদ্ধিমত্তা ও কল্পনাপ্রবণতার কথাও জুড়ে দেওয়া হয় ও তার ভিত্তিতে নম্বর দিতে বলা হয়।
গবেষণার পর ওয়াটকিনস বলেন, “দেখা গিয়েছে সুন্দর দেখতে না হওয়া সত্ত্বেও সৃজনশীল, গুণী পুরুষেরা তথাকথিত রূপবান অথচ তেমন গুণী নন, এমন পুরুষদের সমান নম্বরই পেয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছেন যারা গুণী এবং রূপবান দুটোই। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে কিন্তু এমনটা হয়নি। গুণ আছে কি নেই তা সুন্দরী মহিলাদের নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও হেরফের ঘটাতে পারেনি। আবার যারা সুন্দরী নন, তারা গুণ থাকা সত্ত্বেও নম্বর বেশি নম্বর পাওয়ার বদলে বরং কম নম্বরই পেয়েছেন।
কেন মহিলারা পুরুষদের সৃজনশীলতাকে এতটা গুরুত্ব দেন? এভলিউশনারি বায়োলজির উদাহরণ টেনে ওয়াটকিনস বলেছেন, ‘‘পুরুষদের তুলনায় মহিলারা পছন্দ সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন। বিয়ে করার সময় তারা মাথায় রাখেন সন্তান যেন সুস্থ ও বুদ্ধিদীপ্ত হয়। সৃজনশীলতাকে তারা বুদ্ধির মাপকাঠি মনে করেন হয়তো।’’